মায়ানমারে মুসলিম জীবন্ত নরক থেকে প্রাণ হাতে পালাবার চেষ্টায়।
দুঃখের বিষয় এই যে
আমরা অতীতের গণহত্যা থেকে কিছুই শিখিনি – না হিটলারের জার্মানী থেকে, না
হালের বসনিয়া, কসভো কিংবা রুয়ান্ডা থেকে। ভাষিক কূটাবরণে আজো রোহিঙ্গা
জনগোষ্ঠীর উপর ঘটা অপরাধের মাত্রাকে খাটো করে দেখানোর অপচেষ্টা চলছে। অনেক
সাংবাদিক ঘটনার বর্ণনা দেবার আগে “অভিযোগ আছে যে” (“alleged”) এর মতো
পূর্বপদ ব্যবহার করছেন, যাতে আসলেই কী ঘটেছে সে সম্পর্কে ধুম্রজাল সৃষ্টি
করা যায়। অনেক স্থানীয় সাংবাদিক নিঃসন্দেহে পক্ষপাতদুষ্ট যারা সরকারী প্রচারণাকেই বিতরন করার দোষে দোষী।১৯৪৬ সালে নুরেমবার্গ বিচারসভার মার্কিন প্রধান কৌসুলী রবার্ট জ্যাকসন আন্তর্জাতিক সামরিক বিচার-পরিষদের সামনে দেয়া সমাপনী বক্তব্যে বলেছিলেন,
বাস্তবতা এই যে ইতিহাসের দীর্ঘ পদচারণায় বর্তমান শতাব্দী প্রশংসিত অবস্থানে থাকবে না, যদিনা এর দ্বিতীয় ভাগ প্রথম ভাগের কালিমা মুছে ফেলে। বিংশ শতাব্দীর এই দুটি ঘটনা ইতিহাসের বইগুলোতে সবচাইতে রক্তাক্ত ঘটনা হিসেবেই অন্তর্ভুক্ত হবে। বিশ্বযুদ্ধ দুটোতে হতের সংখ্যা প্রাচীণ ও মধ্যযুগের সকল যুদ্ধে নিহতের সম্মিলিত সংখ্যার চেয়েও বেশী। ইতিহাসের কোনও অর্ধ-শতাব্দী কখনো এই মাত্রার হত্যাযজ্ঞ দেখেনি। দেখেনি এমন নিষ্ঠুরতা, এমন অমানবতা, এমন পাইকারি হারে মানুষকে দাসত্বের শৃংখলে বাঁধা, এমন মাত্রার সংখ্যালঘুর পূর্ণবিলয়। তর্কেমাদার সন্ত্রাসও নাৎসি বিভৎসতার কাছে ফ্যাকাশে লাগে। ভবিষ্যত প্রজন্ম এই দশকগুলোতে ঘটা অনন্য ঐতিহাসিক বাস্তবতা স্মরণে রাখবে। আমরা যদি এই বর্বরতার পেছনের কারণগুলোকে দূরীভূত করে এর পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধ করতে না পারি, তাহলে এটা কোনো অতিরঞ্জিত ভবিষ্যত বাণী হবেনা যদি বলা হয় যে বিংশ শতাব্দী হয়ত সভ্যতারই পরিসমাপ্তি টানবে।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ঘটা এই গণহত্যার মহড়া দেখে এটা অস্বীকার করার অবকাশ নেই যে আমরা দুভাবে ব্যর্থ – প্রথমত “কারণ” গুলোকে দূরীভূত না করতে পারা, আর দ্বিতীয়ত, “বর্বর ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি” প্রতিরোধ না করতে পারা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
https://www.facebook.com/messages/t/100008406966997