সূপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গনে গ্রিক দেবীর মূর্তি কেন আজ বাংলাদেশ যানতে চায়
by মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন || Mufti Sakhawat Hossain
https://www.youtube.com/watch?v=eHZTosIzdhs
সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গণে গ্রীক দেবী থেমিসকে শাড়ি পরিয়ে দিয়ে তাঁর এক ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। পানিতে সাদা শাপলা ফুটে আছে, আর ওর মধ্যে দেবী দাঁড়িয়ে আছেন। ডান হাতে তলোয়ার বাঁ হাতে ওজনদাঁড়ি।
এটা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে স্থাপিত। ভাস্কর সম্ভবত বোঝাতে চাইছে আমাদের বিচারকরা শাড়ি পরা গ্রিক দেবীর অনুসারী, দেবীর স্বর্গীয় ও আইন আর আদেশ কার্যকর করাই আমাদের বিচারকদের কাজ। শিল্পকলা বা ভাস্কর্যের নামে বিচারক ও বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে হেয় ও অপমান করবার এই দৃশ্য এখন থেকে নিত্যদিন বাংলাদেশের মানুষ দেখবে; আর যারা এই ভাস্কর্য দেখবে শাড়ি পরা গ্রিক দেবীর প্রতি তাদের ভক্তি আরো নিবিড় হবে, এটাই হয়তো তাঁদের আশা।
কার মাথায় সুপ্রিম কোর্টে শাড়ি পরা গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য স্থাপনের মারাত্মক দামী বুদ্ধি এসেছিল জানি না। তবে বাংলাদেশের জাতিবাদী সাংস্কৃতিক চেতনার দারুণ একটি নজির এটা। গ্রিক পুরাণে বারো জন টাইটানদের একজন থেমিসকে শাড়ি পরিয়ে দিলেই তিনি আমাদের হয়ে যাবেন, আর তাঁর কাছ থেকে স্বর্গীয় আইন-কানুন শিখে ও আদেশ পেয়ে আমাদের বিচারকরা বিচার করবেন। এটা তো দারুন আইডিয়া!
এবার আসুন আমরা সুপ্রীম কোর্টের সেই গ্রিক ভাস্কর্যটা দেখি।
https://goo.gl/YmlSmA
চারিদিকে শাপলার জলজ আবহাওায় একটি নারীমুর্তি। স্পষ্টতই যা বাঙালি নারী, গ্রিক নয় কোন মতেই। উপস্থাপনা এমন, যেন থেমিস বাঙলার দেবী। এবার আসুন আমরা মুল থেমিস দেবীকে দেখি। নোটের কভার ছবিতেও আছে, তবুও আরেকটা বড় ছবি দিলাম।
https://goo.gl/NcJszy
আমরা দেখতেই পাচ্ছি, মুল দেবী থেকে সুপ্রীম কোর্টের দেবীর উপস্থাপনা ভিন্ন। এই ভিন্ন উপস্থাপনা দিয়ে তাহলে দেবী থেমিসকে বাঙলার সংস্কৃতিতে আত্মস্থ করার চেষ্টা হয়েছে ন্যায়, বিচার আর আইনের প্রতীক হিসেবে।
যে কোন শিল্পবস্তুর দুইটা গুণ থাকে। একটা মানবিক গুণ, আরেকটা প্ল্যাস্টিক গুণ। বাস্তব জগতে যে ঘটনা দেখে আমার মনে যে ভাবের উদয় হয় শিল্পবস্তু সেই ভাবের কাছাকাছি ভাবের উদয় হলে সেটা মানবিক গুনের কারণে হয়েছে। তাহলে শিল্পবস্তু হিসেবে উত্তীর্ণ হতে হলে থেমিসের ভাস্কর্য দেখে আমাদের মনে একটা ভাবের উদয় হতে হবে।
সুপ্রীম কোর্টের এই পরিবর্তিত থেমিসের ভাস্কর্য যে ভাবের উদয় ঘটাবে, তা নিশ্চিতভাবেই সেই প্রিজামশন বা আগাম অনুমানের উপরে দাড়িয়ে থাকবে যে, আমাদের নিজস্ব কোন ন্যায়, বিচার বা আইনের ইতিহাস নেই। আমাদের বিশ্বাস বা ইমানের কোন মূল্য নাই; যা এই কোটি কোটি মানুষের কাছে আইন, নীতিনৈতিকতা ও সামাজিক বিধিবিধান উৎপত্তির ক্ষেত্র ও মানদন্ড হতে পারে। গ্রিক দেবিই আমাদের একমাত্র আরাধ্য। ন্যায় বা আইনের পশ্চিমা ধারণা এটাই একমাত্র সহি, আমরা সেটাকে অনুকরণ করতে পারি মাত্র। পশ্চিমা ন্যায়, আইন ও বিচারের সেই চিন্তা আর ঐতিহ্যকে কেবল আমাদের মাপে কেটেছেটে নেয়াটাই আমাদের কাজ। এই অনুমান ছাড়া এই ভাস্কর্যের আর কোন বার্তা নেই। আসলে এই ধারণা শুধু কলোনিয়াল ভাবাদর্শ বললে কম করে বলা হবে। এটা শুধু কলোনিয়াল নয়, এটা আপন ইতিহাস আর ঐতিহ্যের প্রতি চরম অপমান।
মুসলমানরা স্থাপত্যকলা ও শিল্পকলার বিরুদ্ধে নয়, কিন্তু গ্রিক দেবীর মূর্তি স্থাপনপূর্বক আমাদের জাতীয় মন ও মানসে বিজাতীয় কৃষ্টির অনুপ্রবেশ আমরা কেন করব ?! গ্রিকপুরাণের কল্পিত দেবী থেমিস রোমানদের কাছে ন্যায়ের প্রতীক হতে পারে, কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ট মুসলিম স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা তাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য থেকে ধার করে কেন হীন ঔপনিবেশিক ধ্যানধারণা লালন করব? আমরা ভূইফোঁড় কোনও জাতি নই যে, পরজীবিতার আশ্রয় নিতে হবে।
রোমানদের কাছে ন্যায়ের প্রতীক কল্পিত গ্রিক দেবীর সঙ্গে এই দেশের ঐতিহ্য, ইতিহাস ও ভাব-সম্পদের ন্যূনতম সম্পর্ক নেই। এরপরও কিভাবে আমাদের হাইকোর্টের সামনে এ রকম কল্পিত দেবীর মূর্তিকে স্থাপন করা হলো? কারা, কী উদ্দেশ্যে এটি করার সুযোগ পেলো কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে দেশের মানুষের কাছে করা উচিত।
দেশের মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়ার সর্বোচ্চ স্থান সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে কথিত ন্যায়ের প্রতীক নগ্ন-অশ্লীল দেবী থেমিসের মূর্তি স্থাপন হচ্ছে চরম ধৃষ্টতা এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের অবমাননা। স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের নিজস্ব ইতিহাস, কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও আত্মমর্যাদাবোধেরও সম্পূর্ণ বিপরীত ও সাংঘর্ষিক। গ্রিক দেবীর মূর্তি নয়, মুসলমানদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতীক হলো মহাগ্রন্থ পবিত্র আল কোরআন।
==================================================
Our Fb page :
https://www.facebook.com/TalimuddinF
Our Website :
http://www.talimuddin.com/ (under construction)
Our twitter page :
https://twitter.com/TalimuddinF
Google Plus :
https://plus.google.com/u/1/+Talimudd...
==================================================
by মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন || Mufti Sakhawat Hossain
https://www.youtube.com/watch?v=eHZTosIzdhs
সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গণে গ্রীক দেবী থেমিসকে শাড়ি পরিয়ে দিয়ে তাঁর এক ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। পানিতে সাদা শাপলা ফুটে আছে, আর ওর মধ্যে দেবী দাঁড়িয়ে আছেন। ডান হাতে তলোয়ার বাঁ হাতে ওজনদাঁড়ি।
এটা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে স্থাপিত। ভাস্কর সম্ভবত বোঝাতে চাইছে আমাদের বিচারকরা শাড়ি পরা গ্রিক দেবীর অনুসারী, দেবীর স্বর্গীয় ও আইন আর আদেশ কার্যকর করাই আমাদের বিচারকদের কাজ। শিল্পকলা বা ভাস্কর্যের নামে বিচারক ও বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে হেয় ও অপমান করবার এই দৃশ্য এখন থেকে নিত্যদিন বাংলাদেশের মানুষ দেখবে; আর যারা এই ভাস্কর্য দেখবে শাড়ি পরা গ্রিক দেবীর প্রতি তাদের ভক্তি আরো নিবিড় হবে, এটাই হয়তো তাঁদের আশা।
কার মাথায় সুপ্রিম কোর্টে শাড়ি পরা গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য স্থাপনের মারাত্মক দামী বুদ্ধি এসেছিল জানি না। তবে বাংলাদেশের জাতিবাদী সাংস্কৃতিক চেতনার দারুণ একটি নজির এটা। গ্রিক পুরাণে বারো জন টাইটানদের একজন থেমিসকে শাড়ি পরিয়ে দিলেই তিনি আমাদের হয়ে যাবেন, আর তাঁর কাছ থেকে স্বর্গীয় আইন-কানুন শিখে ও আদেশ পেয়ে আমাদের বিচারকরা বিচার করবেন। এটা তো দারুন আইডিয়া!
এবার আসুন আমরা সুপ্রীম কোর্টের সেই গ্রিক ভাস্কর্যটা দেখি।
https://goo.gl/YmlSmA
চারিদিকে শাপলার জলজ আবহাওায় একটি নারীমুর্তি। স্পষ্টতই যা বাঙালি নারী, গ্রিক নয় কোন মতেই। উপস্থাপনা এমন, যেন থেমিস বাঙলার দেবী। এবার আসুন আমরা মুল থেমিস দেবীকে দেখি। নোটের কভার ছবিতেও আছে, তবুও আরেকটা বড় ছবি দিলাম।
https://goo.gl/NcJszy
আমরা দেখতেই পাচ্ছি, মুল দেবী থেকে সুপ্রীম কোর্টের দেবীর উপস্থাপনা ভিন্ন। এই ভিন্ন উপস্থাপনা দিয়ে তাহলে দেবী থেমিসকে বাঙলার সংস্কৃতিতে আত্মস্থ করার চেষ্টা হয়েছে ন্যায়, বিচার আর আইনের প্রতীক হিসেবে।
যে কোন শিল্পবস্তুর দুইটা গুণ থাকে। একটা মানবিক গুণ, আরেকটা প্ল্যাস্টিক গুণ। বাস্তব জগতে যে ঘটনা দেখে আমার মনে যে ভাবের উদয় হয় শিল্পবস্তু সেই ভাবের কাছাকাছি ভাবের উদয় হলে সেটা মানবিক গুনের কারণে হয়েছে। তাহলে শিল্পবস্তু হিসেবে উত্তীর্ণ হতে হলে থেমিসের ভাস্কর্য দেখে আমাদের মনে একটা ভাবের উদয় হতে হবে।
সুপ্রীম কোর্টের এই পরিবর্তিত থেমিসের ভাস্কর্য যে ভাবের উদয় ঘটাবে, তা নিশ্চিতভাবেই সেই প্রিজামশন বা আগাম অনুমানের উপরে দাড়িয়ে থাকবে যে, আমাদের নিজস্ব কোন ন্যায়, বিচার বা আইনের ইতিহাস নেই। আমাদের বিশ্বাস বা ইমানের কোন মূল্য নাই; যা এই কোটি কোটি মানুষের কাছে আইন, নীতিনৈতিকতা ও সামাজিক বিধিবিধান উৎপত্তির ক্ষেত্র ও মানদন্ড হতে পারে। গ্রিক দেবিই আমাদের একমাত্র আরাধ্য। ন্যায় বা আইনের পশ্চিমা ধারণা এটাই একমাত্র সহি, আমরা সেটাকে অনুকরণ করতে পারি মাত্র। পশ্চিমা ন্যায়, আইন ও বিচারের সেই চিন্তা আর ঐতিহ্যকে কেবল আমাদের মাপে কেটেছেটে নেয়াটাই আমাদের কাজ। এই অনুমান ছাড়া এই ভাস্কর্যের আর কোন বার্তা নেই। আসলে এই ধারণা শুধু কলোনিয়াল ভাবাদর্শ বললে কম করে বলা হবে। এটা শুধু কলোনিয়াল নয়, এটা আপন ইতিহাস আর ঐতিহ্যের প্রতি চরম অপমান।
মুসলমানরা স্থাপত্যকলা ও শিল্পকলার বিরুদ্ধে নয়, কিন্তু গ্রিক দেবীর মূর্তি স্থাপনপূর্বক আমাদের জাতীয় মন ও মানসে বিজাতীয় কৃষ্টির অনুপ্রবেশ আমরা কেন করব ?! গ্রিকপুরাণের কল্পিত দেবী থেমিস রোমানদের কাছে ন্যায়ের প্রতীক হতে পারে, কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ট মুসলিম স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা তাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য থেকে ধার করে কেন হীন ঔপনিবেশিক ধ্যানধারণা লালন করব? আমরা ভূইফোঁড় কোনও জাতি নই যে, পরজীবিতার আশ্রয় নিতে হবে।
রোমানদের কাছে ন্যায়ের প্রতীক কল্পিত গ্রিক দেবীর সঙ্গে এই দেশের ঐতিহ্য, ইতিহাস ও ভাব-সম্পদের ন্যূনতম সম্পর্ক নেই। এরপরও কিভাবে আমাদের হাইকোর্টের সামনে এ রকম কল্পিত দেবীর মূর্তিকে স্থাপন করা হলো? কারা, কী উদ্দেশ্যে এটি করার সুযোগ পেলো কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে দেশের মানুষের কাছে করা উচিত।
দেশের মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়ার সর্বোচ্চ স্থান সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে কথিত ন্যায়ের প্রতীক নগ্ন-অশ্লীল দেবী থেমিসের মূর্তি স্থাপন হচ্ছে চরম ধৃষ্টতা এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের অবমাননা। স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের নিজস্ব ইতিহাস, কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও আত্মমর্যাদাবোধেরও সম্পূর্ণ বিপরীত ও সাংঘর্ষিক। গ্রিক দেবীর মূর্তি নয়, মুসলমানদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতীক হলো মহাগ্রন্থ পবিত্র আল কোরআন।
==================================================
Our Fb page :
https://www.facebook.com/TalimuddinF
Our Website :
http://www.talimuddin.com/ (under construction)
Our twitter page :
https://twitter.com/TalimuddinF
Google Plus :
https://plus.google.com/u/1/+Talimudd...
==================================================
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
https://www.facebook.com/messages/t/100008406966997